সরবরাহ কমের অজুহাতে আবারো দিনাজপুরের হিলিতে বাড়তে শুরু করেছে দেশীয় কাঁচা মরিচের দাম। মাত্র এক রাতের ব্যবধানে কেজিতে ১২০ টাকা করে বেড়েছে কাঁচামরিচের দাম।
সোমবার (৩ জুন) যে কাঁচা মরিচ ২০০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছিল মঙ্গলবার তা বেড়ে ৩২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। সরবরাহ কমার কারণে দাম বাড়ছে দাবি ব্যবসায়ীদের। এদিকে দাম বাড়ায় বিপাকে পড়ছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। এটিকে ব্যবসায়ীদের কারসাজি দাবি করে তদারকি ব্যবস্থা জোরদারের দাবি জানিয়েছেন।
হিলি বাজারে কাঁচামরিচ কিনতে আসা সিদ্দিক হোসেন বলেন, কাঁচামরিচের দাম নিয়ে বাজারে যেন ম্যাজিক খেলার মত হচ্ছে। প্রশাসনের অভিযান ও ভারত থেকে কাঁচা মরিচ আমদানি শুরুর ফলে যে মরিচ ৫০০ টাকায় উঠে গিয়েছিল মুহূর্তেই সেই মরিচ একলাফে ২০০ টাকায় নেমে এসেছিল। বাড়তি দামের কারণে যেখানে আমরা সাধারণ মানুষ কাঁচা মরিচ কেনা বাধ দিয়েছিলাম। দাম কম হওয়ায় আবারো কিছুটা খাওয়ার চিন্তাভাবনা করে পরিমাণে অল্প কিনছিলাম। কিন্তু রাত না পার হতেই আবারো ঊর্ধ্বমুখ কাঁচা মরিচের বাজার ৩২০ টাকায় উঠে গেছে দাম। হঠাৎ কি হয়ে গেলো রাতের ব্যবধানে এতদাম বেড়ে গেলো। এই বিষয়টি কেন হচ্ছে বা কে করছে সেটি প্রশাসনের দেখা উচিৎ। বাড়তি দামের কারণে আমরা সাধারণ মানুষ তো কাঁচা মরিচ কেনা তো দূরের কথা খাওয়া বাদ দিতে হবে।
হিলি বাজারের কাঁচামরিচ বিক্রেতা মমতাজ হোসেন বলেন, হিলির বাজারে আমদানিকৃত কাঁচা মরিচের কোনো সরবরাহ নেই। দেশীয় কাঁচা মরিচ দিয়েই এখানকার চাহিদা মেটানো হচ্ছে। তবে মোকামে কাঁচা মরিচের দামটা স্থিতিশীল হচ্ছে না, এই বাড়ছে তো আবার কমে যাচ্ছে। যার কারণে আমরা কাঁচা মরিচ কিনতেও ভয় পাচ্ছি। আমরা সোমবার মোকামে যে কাঁচা মরিচ ১৬০ টাকা কেজি ক্রয় করে এনে বাজারে ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছিলাম। সেই কাঁচামরিচ আজকে আমাদের মোকামেই কিনতে হলো ২৮০ টাকা কেজি। যার কারণে পরিবহন খরচসহ অন্যান্য কিছু মিলিয়ে আমরা আজকে ৩২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি। ঈদের ছুটির পর রোববার থেকে দেশের বিভিন্ন স্থলবন্দর দিয়ে মরিচ আমদানি শুরু হওয়ায় ও দাম নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের অভিযানের ফলে মোকামে কাঁচা মরিচের দাম খানিকটা কমে গিয়েছিল। যার কারণে আমরাও কম দামে কিনতে পেরেছি সেই মোতাবেক কম দামেই বিক্রি করেছি। কিন্তু আবারো মোকামে কাঁচামরিচের দাম ঊর্ধ্বমুখ হওয়ায় বাজারে এর দাম বাড়ছে।
হিলি স্থলবন্দরের কাঁচা মরিচ আমদানিকারক আনোয়ার হোসেন বলেন, ঈদের ছুটি শেষে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি শুরু হলেও কাঁচা মরিচ আমদানি শুরু হয়নি। এর কারণ হলো বর্তমানে ভারত থেকে এক কেজি কাঁচা মরিচ আমদানিতে আমাদের মূল্য দাঁড়াচ্ছে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকায়। কিন্তু সোমবার দেশে কাঁচা মরিচের পাইকারি বাজার নেমে এসেছিল ১৩০ থেকে ১৫০ টাকায়। এই অবস্থায় ভারত থেকে কাঁচামরিচ আমদানি করে লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছি আমদানি কারকদের। যার কারণে লোকসান থেকে বাঁচতে হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারকরা সোমবার ভারত থেকে কাঁচা মরিচ আমদানি বন্ধ রেখেছিলেন।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর দিনাজপুরের সহকারী পরিচালক মমতাজ বেগম বলেন, কাঁচা মরিচসহ অন্য যে কোনো পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি রুখতে আমরা নিয়মিতভাবে বিভিন্ন বাজার মনিটরিং করছি। এ সময় তাদের ক্রয় বিক্রয়ের ম্যামো দেখে দামের বিষয়টি যাচাই বাছাই করে দেখছি। কেউ যদি অহেতুক কোনো পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি করে সেক্ষেত্রে তার বিরুদ্ধে আর্থিক জরিমানা করা হচ্ছে।